মে ১৯, ২০২৪

ডেস্ক রিপোর্ট:
নানা জাত ও স্বাদের সবজিচাষে নীরব বিপ্লব ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া, রাজাগাঁও, নারগুন, বেগুনবাড়িসহ কয়েকটি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামে। বছরে ৯০০ কোটি টাকার সবজি উৎপাদন হয় এ গ্রামগুলোতে। খবর: জাগোনিউজ
এসব গ্রামের বেশিরভাগ পরিবার এখন সবজিচাষের সঙ্গে যুক্ত। এতে হতদরিদ্র গ্রামবাসীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে। অনেক যুবকের বেকারত্ব ঘুচেছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে গ্রামগুলোর সবজি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
গড়েয়া ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এই ইউনিয়নের মধ্যে বাগেরহাট, চন্ডীপুর, নীলারহাট, গুঞ্জরগড় ও চকহলদি গ্রামে বছরে উৎপাদন হচ্ছে দেড় হাজার মেট্রিক টন সবজি। গ্রামগুলোর উৎপাদিত শাকসবজি জেলার চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাট-বাজারে। এখান থেকেই বছরে বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১০০ কোটি টাকার সবজি।
গ্রামগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, বেগুন, ঢেঁড়স, বাঁধাকপি, করলা, পটোলসহ বিভিন্ন সবজি চাষ হয়েছে। গ্রামগুলোতে সকাল হলেই ছুটে যান ব্যবসায়ীরা।
চকহলদি গ্রামের কৃষক গিয়াস উদ্দিন জানান, কয়েক বছর আগেও তিন বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করতেন। তবে এখন রবি মৌসুমে পুরো জমিতেই সবজি আবাদ করছেন।
সিরাজ আলী বলেন, ধানচাষের চেয়ে সবজিচাষ লাভজনক। এক বছরে মৌসুমভিত্তিক নানা সবজি চাষ করা যায়। এতে প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ করতে পারছি।
পাশের রাজাগাঁও গ্রামের প্রান্তিক কৃষক সাদেকুল আলম এক সময় শুধু বোরো ও আমন ধান চাষাবাদ করতেন। কয়েক বছর ধরে অন্য ফসলের চাষাবাদ কমিয়ে সবজি চাষে ঝুঁকেছেন। সাদেকুল আলম বলেন, এবার সবজির ফলন ভালো হয়েছে। তবে শুরুতে কিছুটা বাড়তি দাম পেলেও এখন বাজার দর পড়ে গেছে।
পাশের বাগেরহাট আড়তের স্থানীয় ব্যাপারী কাদের মিয়া বলেন, প্রতিদিন এই ইউনিয়নের বাগেরহাট, চন্ডীপুর মোড় ও গড়েয়া আড়তে পাইকারিভাবে সবজি বেচাকেনা হয়। বিকেলের পর থেকে ট্রাকে সবজি লোড করা হচ্ছে। রাতে এসব সবজি ট্রাকে করে সরাসরি রাজধানী ঢাকার আড়তে পৌঁছে যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় মোট ৩ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করা হয়।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জাগে নিউজকে বলেন, সদর উপজেলার মধ্যে গড়েয়া ও নারগুন ইউনিয়ন কৃষিতে সমৃদ্ধ এলাকা। কয়েক বছর ধরে সবজির ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। এখান থেকেই বছরে বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার সবজি। এ কারণে সবজিচাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা। ভবিষ্যতে সবজির গ্রামগুলোকে রোল মডেল করে আদর্শ কৃষিগ্রাম করার পরিকল্পনা রয়েছে কৃষি বিভাগের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *