শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেতরে পরীক্ষার্থীদের অবস্থান, স্লোগান

নতুন করে আর পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এইচএসসির ফল প্রকাশের দাবিতে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষাসচিব অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেল ৪টায় তারা মন্ত্রণালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেন।
এ সময় তারা ‘আমাদের দাবি একটাই-পরীক্ষা বাতিল চাই’, ‘দাবি মোদের একটাই-পরীক্ষা বাতিল চাই’, ‘আপস না সংগ্রাম-সংগ্রাম-সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। এর আগে সকাল থেকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হন পরীক্ষার্থীরা। বেলা দুইটার দিকে তারা জিরো পয়েন্টের দিকের সচিবালয়ের গেট দিয়ে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে ঢুকে পড়েন। পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দশ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান এবং আলোচনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করেন। সে সময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশ্বাস দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এর আগে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা অর্ধেক প্রশ্নোত্তরে অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে জানানো হয়। সেই সঙ্গে রীক্ষা ১১ সেপ্টেম্বর থেকে আরও দুই সপ্তাহ পিছিয়ে যাবে বলেও জানানো হয়।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে কয়েক দফায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
প্রথমে গত ১৮ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তারপর একসঙ্গে ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর ২৮ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরে ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
তবে ৭ আগস্ট ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আবুল বাশারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১১ আগস্ট পরীক্ষা হচ্ছে না। অনিবার্য কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর বিভিন্ন থানায় যে হামলার ঘটনা ঘটে তাতে প্রশ্নপত্র রাখা ট্রাংকগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা যায়। এজন্য ১১ আগস্ট থেকে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়। ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা বোর্ড প্রস্তাব দিলে সেটি অনুমোদন হয়। তবে পরীক্ষার্থীরা সোমবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে পরীক্ষায় বসার মতো অবস্থায় নেই বলে বিক্ষোভ করেন। যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে, তার ভিত্তিতে পরীক্ষার ফল প্রকাশের দাবি জানান পরীক্ষার্থীরা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সন্ধ্যায় দাবি পূরণের বিষয়ে আশ্বাস দেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আবুল বাশার। এমন অবস্থার মধ্যে আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জরুরি সভা হয়। সেখানে এইচএসসি ও সমমানের বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা অর্ধেক প্রশ্নোত্তরে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।