এবার হাসিনার বিরুদ্ধে শাপলা চত্বরে গণহত্যার অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে

ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলি করে হত্যার অভিযোগের পর এবার ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গুলি চালিয়ে গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায়। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসির মামুন, ইমরান এইচ সরকারসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) ধানমন্ডির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা কার্যালয়ে আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম এই অভিযোগ দাখিল করেন। এ পর্যন্ত শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট ঢাকার একটি আদালতে শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী। মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সেই মামলার আবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ব্লগাররা ধর্মীয় অবমাননা ও হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি এবং আপত্তিকর লেখালেখি করার প্রতিবাদে হেফাজত ইসলাম ১৩ দফা দাবি সরকারের কাছে দেয়। সরকার দাবি না মানায় ২০১৩ সালে ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে রাস্তায় অবস্থান নেয় তারা। ওইদিন রাত ১১টা থেকে পরের দিন বেলা ১১টা পর্যন্ত রাস্তা ও বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে শেখ হাসিনার মদদে আসামিদের যোগসাজশে অন্য আসামিরা এজাহারে বর্ণিত পুলিশ ও আর্মি সদস্যরা মিলে নিরীহ মাদরাসাছাত্র ও পথচারীদের ওপর গণহত্যা চালায়। তাদের হত্যা করে লাশগুলো সিটি করপোরেশনের গাড়িতে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে গুম করে। এসময় বহু মাদরাসাছাত্র হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তাদের অভিভাবকরা সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা ও জিডি করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা নেয়নি। একজন রাজনীতিবিদ তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নির্বিচার গণহত্যার কারণে আদালতে অভিযোগটি এনেছেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এই আন্দোলনে হাজারের কাছাকাছি মানুষ নিহত হয়েছেন। বেশির ভাগই মারা গেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং পুলিশের গুলিতে। এসব অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে।